Know Your Age
ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়াল : ভাল ছবি উঠানোর নিয়মকানুন
ক্যামেরা যত ভাল ছবিও তত ভাল, কথাটা কিছুটা সত্য তো বটেই। কিন্তু সাধারন ক্যামেরা ব্যবহার করে চমৎকার ছবি উঠানোর উদাহরন কম নেই। দামী এসএলআর হোক আর সাধারন পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা হোক অথবা মোবাইল ফোনের ক্যামেরাই হোক, কিছু নিয়ম মেনে যে কেউ সুন্দর ছবি উঠাতে পারেন। পেশাদার ফটোগ্রাফাররা যে নিয়ম মেনে ছবি উঠান সেগুলি একবার জেনে নিন।
ছবির বিষয় ঠিক করুন
ক্যামেরায় ক্লিক করলে ছবি উঠবে। ক্যামেরার সামনে যা আছে সেটাই পাবেন। তাকে কি ভাল ফটোগ্রাফ বলা যায়!
ছবি উঠানোর আগে ছবিকে শিল্পীর আকা ছবির সাথে তুলনা করুন। তিনি অনেক ভেবেচিন্তে যা বক্তব্য সেটা ফুটিয়ে তোলেন। ফটোগ্রাফার হিসেবে আপনার সেটাই দায়িত্ব।
কাজেই ছবি উঠানোর আগে একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন, কিসের ছবি উঠাচ্ছি। এর বক্তব্য কি ? কোন ব্যক্তির ছবি উঠালে তার পোষাক, পরিবেশ, আলো এগুলি তারসাথে মানানসই কি-না।
কাজেই ছবি উঠানোর প্রথম নিয়ম, ছবির বক্তব্য ঠিক করুন। যে ছবিই উঠান না কেন, একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন কিসের ছবি উঠাচ্ছেন। ছবির বক্তব্য কি। অন্য কোনভাবে উঠালে কি ছবি আরেকটু ভাল হত ? দিনের অন্য সময়ে, কিংবা কৃত্রিম আলো ব্যবহার করে।
তিনের নিয়ম
ছবি উঠানোর সময় ফটোগ্রাফাররা সাধারনভাবে যা করেন, দিগন্ত রেখা ছবির মাঝামাঝি রেখে ফ্রেম করেন। অর্থাত আপনার সামনে যদি মাঠ এবং আকাশ থাকে তাহলে মাঠের জন্য অর্ধেক এবং আকাশের জন্য অর্ধেক এভাবে ভাগ করে নেন। কিংবা সমুদ্র এবং আকাশ থাকে তাহলে অর্ধেক আকাশ এবং অর্ধেক পানি এভাবে ছবি উঠান। একে অনেকে তুলনা করে খেলার ড্র এর সাথে তুলনা করেন। কে বিজয়ী জানা নেই। ফটোগ্রাফির একটি গুরুত্বপুর্ন নিয়ম রুল অব থ্রি এর পরিপন্থী। হাজার বছর ধরে রুল অব থ্রি প্রচলিত।
নিয়ম হচ্ছে, দুভাগ একজনকে বাকি একভাগ আরেকজনক দিন। বিষয়ের গুরুত্ব অনুযায়ী। যদি সমুদ্র গুরুত্বপুর্ন হয় দিগন্তরেখা তিনভাগের দুভাগ ওপরে রাখুন, যদি আকাশ গুরুত্বপুর্ন হয় তাহলে আকাশকে তিনভাগের দুভাগ দিন। অনায়াসে সুন্দর ছবি পাবেন।
পুরো ছবি উঠান
আপনি একটি সুন্দর ফুলের ছবি উঠাতে চান। অনেকগুলি ফুলের মধ্যে একটি ফুল আপনার কাছে গুরুত্বপুর্ন। বাগানের ছবি উঠানোর পর সেই ছবি কাউকে দেখানোর পর লক্ষ্য করলেন তারা সেই বিশেষ ফুলটি লক্ষ্য করছে না। কারন একটিই, আপনি সেভাবে ছবি উঠাননি।
যদি ফুলের ছবি উঠাতে হয় যতটা সম্ভব কাছে থেকে ছবি উঠান। এমনভাবে যেখানে সেই ফুলটিই ছবির অধিকাংশ যায়গা জুড়ে থাকে। অন্য ফুলগুলির কাজ এই বিশেষ ফুলের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলা।
ফুল না হয়ে যদি বিশেষ কোন বস্তু, এমনকি কোন ব্যক্তির বিষয়ও হয় তাহলেও এই নিয়মে ছবি উঠান। নিজেকে বলতে পারেন, ছবি উঠানোর পর ফটোশপে পাশ থেকে বাদ দেয়া যাবে। সেটা না করে ছবি সেভাবে উঠানো অভ্যেস করুন।
ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে একটি বিখ্যাত উক্তি রয়েছে, ছবি ভাল হয়নি কারন আপনি যথেষ্ট কাছে যাননি। কাজেই, ছবি উঠানোর জন্য যতটা সম্ভব কাছে যান, অথবা লেন্স পাল্টান অথবা জুম ব্যবহার করুন।
পোর্ট্রেট মোডে ছবি উঠান
সাধারনত অধিকাংশ ছবি উঠানো হয় ল্যান্ডস্কেপ মোডে, পাশের দিকে বেশি যায়গা রেখে। অথচ ক্যামেরা ঘুরিয়ে সেই ছবিকেই লম্বালম্বিভাবে ছবি উঠানো সম্ভব। একজন দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তির ছবি ল্যান্ডস্কেপ মোডে উঠালে পাশে অনেক অপ্রয়োজনীয় যায়গা থেকে যায়। অথচ লম্বলম্বিভাবে উঠালে তাকে আরো ভালভাবে দেখানো সম্ভব। ভুলে যাবেন না, এজন্যই এর নাম পোর্ট্রেট মোড।
কোন ছবি কোনভাবে উঠালে ভাল হবে এর কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। একই ছবি যেকোনভাবেই সুন্দর হতে পারে। সবসময় ল্যান্ডস্কেপ মোডে না উঠিয়ে একবার নিজেকে বলুন, এই ছবিটাই একটা পোর্ট্রেট মোডে তুলে দেখি না কি হয়।
ফ্রেমের মধ্যে ফ্রেম
প্রিন্ট করা ছবি আমরা ফ্রেমে রাখি, ডিজিটাল ছবির চারিদিকেও ফ্রেম ব্যবহার করা হয়। ইচ্ছে করলে ছবি উঠানোর সময় কোনকিছুকে ফ্রেম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। প্রকৃতি, গাছের পাতা, দেয়াল থেকে শুরু করে নিজের হাত, যেকোন কিছুই ফ্রেম হিসেবে ছবির সৌন্দর্য বাড়াতে পারে।
ব্যাকগ্রাউন্ডের দিকে দৃষ্টি দিন
ঘরে অথবা বাইরে যেখানেই ছবি উঠান না কেন, পেছনে কি রয়েছে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। ছবি উঠানোর সময় যদি অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তির উপস্থিতি থাকে তাহলে কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। পেছন থেকে কেউ উকি দিচ্ছে দেখা গেলে ভাল ছবি হয় না। একইভাবে অপরিস্কার, অগোছালো কিছু থাকলে সেগুলি এড়িয়ে ছবি উঠান। সামান্য সরে গেলেই এই বিষয়গুলি এড়িয়ে ভাল ছবি পাওয়া যাবে।
শুধুমাত্র তাত্ত্বিক জ্ঞানে ভাল ছবি পাওয়া যায় না। ভাল ছবির পাওয়ার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হচ্ছে ছবি উঠানোর পর সেখানে কোন ত্রুটি আছে কিনা বের করা এবং কি করলে আরো ভাল ছবি পাওয়া যেত সেটা বের করা। কাজেই যত বেশি ছবি উঠাবেন তত ভাল ছবি পাওয়ার সম্ভাবনা।
Photography Tutorial: মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি
Photography Tutorial: মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি
ছবি উঠানোর সময় হাত এবং ক্যামেরা স্থির রাখবেন, সম্ভব হলে ট্রাইপড ব্যবহার করবেন অথবা কোথাও ঠেস দিয়ে দাড়াবেন, বেশি সাটার স্পিড ব্যবহার করবেন, ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করবেন এসব কথা শুনেই আপনি অভ্যস্থ। এর বিপরীত দিক কি কখনো ভেবে দেখেছেন। ছবি উঠানোর সময় ইচ্ছে করে ক্যামেরা নাড়ানো। ফটোগ্রাফিতে এর নাম মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি।
মুল বিষয় হচ্ছে সাটার স্পিড কম ব্যবহার করবেন যেন বেশি সময় ধরে এক্সপোজার পাওয়া যায়। যতক্ষন সাটার খোলা থাকবে সেই সময়ে ক্যামেরা নাড়াবেন। আলোর যায়গাগুলি একধরনের গতিশীল আলোকপথ তৈরী করবে।
একেবারে অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজটি না করে একেই নিজের পছন্দমত কাজে ব্যবহার করতে পারেন। যেমন জুম ইফেক্ট।
Aperture Priority মোড সিলেক্ট করুন। এপারচার ২২ সেট করুন। যে বিষয়ের ছবি উঠাবেন সেখানে ফোকাস করুন। সাটার রিলিজ চেপে ছবি উঠানোর সময় দ্রুত জুম কম বা বেশি করুন। আলোকরশ্মির ইফেক্ট পাবেন এরফলে।
অথবা ব্যবহার করতে পারেন রোটেশন ইফেক্ট। ছবি উঠানোর সময় ক্যামেরা বৃত্তকারে ঘুরান, অথবা আপনি নিজেই ক্যামেরা সহ ঘুরুন। হয়ত স্পষ্ট বিষয় পাবেন না কিংন্তু রঙের বৈচিত্র থাকলে মজাদার কিছু পাবেন। উদাহরনের ছবিটি মাথার ওপর বড়বড় গাছের।
অথবা বাগানে ফুলের ছবি উঠানোর সময় সাটার স্পিড একেবারে কমিয়ে ইচ্ছেমত ক্যামেরা ঘুরান। একেবারে ভিন্ন ধরনের ছবি পাবেন। ক্যামেরা ওপরে নিচে করে আরেকধরনের ইফেক্ট পেতে পারেন।
জুম ইফেক্ট এর জন্য এসএলআর অথবা জুম-রিং ব্যবহার করা যায় এমন ক্যামেরা প্রয়োজন হবে। অন্য ইফেক্টগুলি ব্যবহার করা যাবে যে কোন ক্যামেরায়।
ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ডিজিটাল ফটোগ্রাফি
ভাল ছবি উঠানোর নিয়ম-কানুন
কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন
সঠিক এক্সপোজার ব্যবহার
ট্রাইপড কেন ব্যবহার করবেন
ফ্লাশ কখন ব্যবহার করবেন না
ডেপথ অব ফিল্ড ব্যবহার
জেপেগ বনাম র মোড
প্যানোরমা ছবি উঠানোর নিয়ম
পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির নিয়ম
ফোকাল লেন্থ, এঙ্গেল অব ভিউ এবং নানা ধরনের লেন্স
ক্যামেরা ব্যাগ – কি দেখে কিনবেন
সঠিক রঙের জন্য হোয়াইট ব্যালান্স
মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি
ফটোগ্রাফির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি
ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম
ফটোগ্রাফি থেকে আয়
ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের নিয়ম
ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার, মিটারিং মোড
ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার
ডিজিটাল ক্যামেরার ফার্মঅয়্যার আপগ্রেড করা
ক্যানন ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার
এইচডিআর ফটোগ্রাফি
ফটোশপ টিউটোরিয়াল : ফটোশপ কেন ব্যবহার করবেন
ফটোশপ টিউটোরিয়াল : ফটোশপ কেন ব্যবহার করবেন
ইমেজ এডিটিং এর ক্ষেত্রে এডবি ফটোশপকে বলা হয় ইন্ডাষ্ট্রি ষ্ট্যান্ডার্ড। এর ব্যবহার অন্যান্য সফটঅয়্যার থেকে কিছুটা ভিন্ন, যেকারনে অনেকেই কিভাবে শুরু করবেন তা নিয়ে সমস্যায় পড়েন। এমনকি বই পড়ে কিংবা ভিডিও টিউটোরিয়াল ব্যবহারের পরও মনে হয় কোথায় যেন কিছু বাদ পড়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে সহায়তা করার জন্য ধারাবাহিকভাবে ফটোশপের টিউটোরিয়াল প্রকাশ করা হচ্ছে। ইন্টারনেটে এধরনের টিউটোরিয়ালের সুবিধে হচ্ছে শিক্ষার্থী অনায়াসে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারেন। এক শিক্ষার্থী অন্যের সাথে যোগাযোগও করতে পারেন এর মাধ্যমে।
প্রথমে কিছু সাধারন আলোচনা সেরে নেয়া যাক, প্রথম প্রশ্ন। ফটোশপ কেন ব্যবহার করবেন
ফটোশপ কি ? একেবারে সঠিকভাবে না জানলেও মোটামুটি ধারনা রয়েছে সকলেরই। এমনকি কম্পিউটার ব্যবহার করেন না এমন ব্যক্তিরও। এটাই বলে দেয় এর জনপ্রিয়তা কতখানি। এক কথায়, ইমেজ এডিটিং এর ক্ষেত্রে বিশ্বের ১ নং সফটওয়্যার। এই কথায় বিষয়টি পরিস্কার হয় যতটুকু ঘোলাটে হয় তারচেয়ে বেশি। ইমেজ এডিটিং কি জিনিষ ? কে সেকাজ করে ? আমার সেটা প্রয়োজন কেন ? ইত্যাদি ইত্যাদি।
গ্রাফিক ডিজাইন যার পেশা, অথাৎ চাকরী করেন ডিজাইনার হিসেবে কিংবা অর্থ উপার্জনের জন্য নিজে কাজ করেন তারা ফটোশপ ব্যবহার করেন বিজ্ঞাপন, লিফলেট, পত্রিকা, বইয়ের প্রচ্ছদ, পোষ্টার থেকে শুরু করে সব ধরনের ডিজাইনের কাজে। যাকিছু ছাপা হয়, যাকিছু টিভিতে দেখানো হয়, যাকিছু ইন্টারনেটে রাখা হয় সব যায়গায় রয়েছে ফটোশপে কাজের সুযোগ।
যারা ভিডিও এডিটিং কিংবা এনিমেশনের কাজ করেন তাদেরও ছবির কাজ করতে হয় এখানেই। থ্যিডি মডেলের ওপর ব্যবহারের জন্য ম্যাটেরিয়াল থেকে শুরু করে থ্রিডি পেইন্টিং, স্পেশাল ইফেক্ট সবকাজ করা যায় ফটোশপে।
প্রোগ্রামার, ওয়েব ডিজাইনাররা তাদের ছবির অংশটুকু করে নেন ফটোশপে। ফটোগ্রাফাররা তাদের ছবি ঠিক করেন ফটোশপে।
এর কোনটিই যদি আপনার প্রয়োজন না হয় তাহলে শখের বিষয়টি মনে করুন। ক্যামেরায় (অথবা মোবাইল ফোনে) ছবি উঠানোর শখ নিশ্চয়ই আছে। এবং লক্ষ্য করেছেন আপনার ছবি একটা দামী পত্রিকার ছবির মত উজ্জ্বল, ঝকঝকে হয় না। তারা দামী ক্যামেরা ব্যবহার করে, একাজে দক্ষ একথা মনে রাখার পরও আরেকটা বিষয় উল্লেখ করতে হয়, ছবি সরাসরি ঝকঝকে হয় না। কাজটি ফটোশপে (অথবা এই ধরনের কোন সফটঅয়্যারে) করে নেয়া হয়।
অথবা বিয়ে-জন্মদিন-ঈদ-বড়দিন-পুজায় কাউকে নিজের তৈরী কার্ড দিতে চান। সেখানে নিজের কিংবা প্রিয় কারো ছবি, অথবা নিজের উঠানো একটা ফুলের ছবি বসিয়ে দিতে চান। একাজটিও করে নিতে পারেন সবার সেরা সফটওয়্যারে।
আর যদি আরো বড় ধরনের কাজের দিকে যান, যেমন ডিজিটাল পেইন্টিং তাহলেও ফটোশপ। ক্যানভাসে ছবি একে যারা খ্যাতি অর্জন করেছেন তাদের কথা একবার মনে করুন। তারা যাকিছু ব্যবহার করেন তার সবকিছুই ফটোশপে ব্যবহার করা সম্ভব।
এককথায় যেখানে ইমেজ সেখানেই ফটোশপ। প্রিন্ট, ওয়েব, মাল্টিমিডিয়া, ভিডিও সব যায়গায়।
ফটোশপের সবই ভাল, সবচেয়ে ভাল কাজ করা যায়, একথা জানার সাথেসাথে আরেকটি কথা জেনে নেয়াই ভাল। এর ব্যবহার খুব সহজ না। ইমেজ এডিটিং এর বহু সফটওয়্যার পাওয়া যাবে যেগুলির ব্যবহার ফটোশপের তুলনায় সহজ। সেতুলনায় ফটোশপ তৈরী হয়েছে পেশাদারীদের জন্য।
কাজেই সেরা সফটওয়্যার দিয়ে যদি সেরা ফল পেতে চান তাহলে কিছু অতিরিক্ত সময়, পরিশ্রম, মেধা ব্যয় করতেই হবে। বছরের পর বছর চেষ্টা করে তবেই একজন ফটোশপে দক্ষ হয়। যদি তাতে আপত্তি থাকে তাহলে সহজ কোন সফটওয়্যার বেছে নেয়াই ভাল।
কোন ভার্শন ব্যবহার করবেন
বর্তমানে ফটোশপের সর্বশেষ ভার্শন সিএস-৫। প্রশ্ন করতেই পারেন শেষ ভার্শন প্রয়োজন হবে না-কি আগের অন্য ভার্শন করলে চলবে। নতুন ভার্শন মানেই যখন আরো শক্তিশালী কম্পিউটার।
যারা পেইন্টিং এর কাজ করেন তারা পুরনো ভার্শন ব্যবহার করেন। উদাহরন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কমিক নির্মাতা মারভেল ব্যবহার করে ভার্শন ৩ অথবা ৪। পরিচিত গ্রাফিক ডিজাইনারদের জিজ্ঞেস করলে জানবেন তারাও পুরনো কোন ভার্শন ব্যবহার করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভার্শন ৭। কাজেই আপনাকে লেটেষ্ট ভার্শন ব্যবহার করতেই হবে এমন কথা নেই। আবার পুরনো ভার্শনে নতুন ভার্শনের সবকিছু রয়েছে এটাও ধরে নেয়ার কারন নেই। যেমন সেএস৫ ভার্শনে থ্রিডি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, স্মার্ট ফিল সহ অনেকগুলি নতুন বিশেষ ফিচার রয়েছে। এমনকি ভাল পারফরমেন্সের জন্য উন্নত গ্রাফিক্স কার্ডের সর্ব্বোচ্চ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। পুরনো ভাশর্নে এই সুবিধেগুলি পাওয়া যাবে না।
বিষয়টি সহজ করে দেখা যাক। যদি সম্ভব হয় নতুন ভার্শন ব্যবহার করবেন। যদি কম্পিউটার যথেষ্ট শক্তিশালী না হয় তাহলে পুরনো ভার্শনে ক্ষতি নেই। প্রয়োজনীয় সব কাজই করা যাবে। ভার্শন ৫.৫ থেকে পরবর্তী যেকোন ভার্শন ব্যবহার করা যেতে পারে।
কি প্রয়োজন
ফটোশপ উইন্ডোজ এবং ম্যাকে একইভাবে কাজ করে। এই টিউটোরিয়ালগুলি উইন্ডোজের জন্য হলেও আপনি অনায়াসে ম্যাকে কাজ করতে পারবেন। কাজেই আপনার প্রথম প্রয়োজন উইন্ডোজ অথবা ম্যাক অপারেটিং সিষ্টেমের একটি কম্পিউটার। সেখানে ফটোশপ সফটঅয়্যার ইনষ্টল করা।
নতুন ভার্শনের ফটোশপ যথেষ্ট বড় সফটঅয়্যার। কাজেই শক্তিশালি প্রসেসর, যথেষ্ট পরিমান মেমোরী, হার্ডডিস্কে যথেষ্ট পরিমান যায়গা এগুলিও প্রয়োজন। যদি নতুন কম্পিউটার কেনার বিষয় থাকে তাহলে দ্রুতগতির প্রসেসর, বেশি মেমোরী, বড় আকারের মনিটর, ভাল গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিন। নিখুত কাজের জন্য উন্নতমানের মাউস প্রয়োজন। ড্রইং এর জন্য প্রেসার সেনসিটিভ গ্রাফিক ট্যাবলেট (ওয়াকম হতে পারে) ব্যবহার করলে আরো সুন্দর এবং নিখুত কাজ করা সম্ভব হবে।
কাগজ থেকে ছবি ব্যবহার করতে হলে স্ক্যানার প্রয়োজন হবে। এছাড়া ছবি উঠানো প্রয়োজন হলে ক্যামেরা থাকা চাই। ফিল্ম ক্যামেরার তুলনায় ডিজিটাল ক্যামেরা বেশি সুবিধাজনক।
উল্লেখ করা সবকিছু যদি নাও থাকে, কম্পিউটারে শুধুমাত্র ফটোশপ ইনষ্টল করেই কাজ শুরু করুন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য গ্রাফিক ডিজাইন কিভাবে শিখবেন
ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য গ্রাফিক ডিজাইন কিভাবে শিখবেন
ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রাফিক ডিজাইন কাজ একটি বড় কাজের যায়গা। হিসেব যেহেতু ডলারে এবং অল্প কাজ করেই এভাবে হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। টাকার হিসেবে পরিমানটা যথেষ্ট। যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রাফিক ডিজাইন পেশায় যেতে চান তাদের প্রথম প্রশ্ন, কিভাবে শিখব ?
এখানে শেখার সম্ভাব্য পথগুলি সম্পর্কে ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রথমেই একটা বিষয় পরিস্কার করে নেয়া ভাল। ইন্টারনেটে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে হবে সারা বিশ্বের ডিজাইনারদের সাথে। প্রায় সব দেশেই একজন শিক্ষার্থী গ্রাফিক ডিজাইনে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী নিতে পারেন। বাংলাদেশে এধরনের ব্যবস্থা নেই। এছাড়া শিক্ষাকে একাডেমিক এবং প্রফেশনাল এই দুভাগে ভাগ করা হয়। বাংলাদেশে প্রফেশনাল ডিগ্রী বলে কোন বিষয় নেই। অর্থতি গ্রাফিক ডিজাইন শেখার জন্য প্রচলিত শিক্ষা প্রতিস্ঠানে যেমন ব্যবস্থা নেই তেমনি দীর্ঘমেয়াদী ট্রেনিং নেয়ার ব্যবস্থাও নেই। ট্রেনিং সেন্টার নামে যে ব্যবস্থা আছে সেখানে যারা শেখান তাদের অনেকেই ডিজাইনের মুল নিয়ম জানা প্রয়োজন বোধ করেন না। কাজেই তিনি শেখান কি করিলে কি হয় পদ্ধতিতে। তারকাছে কাজ শিখেই সরাসরি কাজ করার আশা করতে পারেন না।
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার জন্য কি শেখা প্রয়োজন সেটা আগে জানা প্রয়োজন। একজন শিল্পীকে কয়েক বছর পড়াশোনা করে ছবি আকা শিখতে হয়। এই দীর্ঘ সময়ে তাকে শেখানো হয় রং কি, রেখা কি। কিভাবে একাধিক রঙের মিশ্রনে বিশেষ রং পাওয়া যায়। এই বিষয়গুলি বিজ্ঞান। ডিজিটাল ডিজাইনের ক্ষেত্রে কারিগরী বিষয় আরো বেশি গুরুত্বপুর্ন। ডিসপ্লেতে রং কিভাবে কাজ করে, কাগজে প্রিন্ট করার সময় কিভাবে কাজ করে, ইন্টারনেটে কিভাবে কাজ করে এবিষয়ে ভাল জ্ঞান না থাকলে আপনি ভাল ডিজাইনার হতে পারেন না। সেইসাথে বিভিন্ন ধরনের ইমেজ ফরম্যাট, তাদের সুবিধে-অসুবিধে, বিভিন্ন সফটঅয়্যার এবং ডিভাইস সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। শেখার প্রথম ধাপ পুরোপুরি তত্ত্ব। কোন টুল ব্যবহার করে কিভাবে কাজ করতে সেটা পরবর্তী ধাপ। এই প্রথম ধাপটিই সাধারনত এড়িয়ে যাওয়া হয়। ফলে যিনি শেখেন তিনি নিজেকে ডিজাইনার মনে করছেন অথচ ক্লায়েন্ট কেন তার কাজ পছন্দ করছেন না সেটা বুঝছেন না।
কাজেই বাংলাদেশ থেকে কেউ যখন বলেন কিভাবে শিখব তার উত্তর দেয়া কঠিন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি কোন প্রতিস্ঠানের সহায়তা পান। প্রাথমিক বিষয়গুলি অল্প সময়ে শিখে নেয়া যায়। যদি নিজে বই পড়ে শিখতে হয় তাহলে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন। আবার অনেকে ধরে নেয় ট্রেনিং যখন নিচ্ছি তখন আর বইপত্র পড়া প্রয়োজন কি। এই মনোভাব নিয়ে কখনও ভাল গ্রাফিক ডিজাইনার হবেন না।
ভাল গ্রাফিক ডিজাইনার হওয়ার জন্য অবশ্যই পড়াশোনা করতে হবে। বর্তমানে পড়াশোনার সুযোগ অনেক বেশি। ইন্টারনেটে খোজ করলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য পাওয়া যায়, বিনামুল্যে বই ডাউনলোড করা যায়।
সেইসাথে কারো সহযোগিতা পেলে কাজ সহজ হয় অনেকটাই। কোন প্রতিস্ঠান বা অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তি। এরসাথে খরচের বিষয় রয়েছে। আপনি যে বিষয়কে বাকি জীবনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন সেজন্য খরচ করাটাই কি যৌক্তিক না।
ইউনিভার্সিটি থেকে একটা ডিগ্রী নিলে কিছু একটা চাকরী পাওয়া যাবে একতা ভোলার সময় হয়েছে অনেক আগেই। আশ্চর্যজনকভাবে এখনও অধিকাংশ ছাত্র এই নিয়মেই চলতে অভ্যস্থ। আশা করেন অলৌকিক কিছু ঘটে যাবে, ভাল একটা চাকরী জুটে যাবে। বাস্তবতা হচ্ছে মানুষ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিয়ে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কাজ করছে, এমবিএ ডিগ্রী নিয়ে ব্যাংকের কেরানী হচ্ছে। কারন একটাই, শিক্ষা প্রতিস্ঠানের শিক্ষা এবং বাস্তব কাজের সমম্বয় না থাকা।
আপনি এই ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে পারেন না। যা পারেন তা হচ্ছে নিজেকে নিরাপদ রাখতে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা। বাস্তবে যা করতে হবে সেটা শেখার দিকে দৃষ্টি দেয়া। গ্রাফিক ডিজাইন যদি শিখতেই হয় ভালভাবে শিখুন, অথবা মাথা থেকে সহজে টাকা আয়ের চিন্তা বাদ দিন।
ফ্রিল্যান্সারের ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হওয়ার ৫ কারন
ফ্রিল্যান্সিং কাজে ক্রিয়েটিভিটি অমুল্য সম্পদ। অনেক ক্লায়েন্ট মুলত নতুন ধারনা পাওয়ার জন্যই নিয়মিত কর্মীর বদলে ফ্রিল্যান্সারের খোজ করেন। অথচ অনেক ফ্রিল্যান্সারেরই অভিজ্ঞতা, আশানুরুপ নতুন কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। কখনো কখনো মনে হয় নতুন কিছু মাথায় আসছে না।
এই সমস্যার সহজ কোন সমাধান নেই। বরং সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কিছু কারন মানুষের জানা। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারের বিভিন্ন কাজের পরিবেশ, প্রত্যাসা এবং সফলতা নানাভাবে পর্যালোচনা করে এগুলি পাওয়া গেছে।
প্রধান ৫টি কারন এখানে তুলে ধরা হচ্ছে;
একসাথে একাধিক কাজ করা
অনেকেই মনে করেন একসাথে অনেকগুলি কাজ করতে পারা (মাল্টিটাস্কিং) বড় যোগ্যতা। কারো কারো ক্ষেত্রে সেটা হলেও সবাই লিওনার্দো দা ভিঞ্চি নন। তিনি একইসাথে দুহাতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে পারতেন।
অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে একসাথে একাধিক কাজ করার চেষ্টা করলে প্রতিটি কাজেই মনোযোগে ভাটা পড়ে। সৃজনশীল কাজ যেখানে বিষয় সেখানে এই সমস্যা আরো প্রকট।
আপনার জন্য মাল্টিটাস্কিং সমস্যা কিনা যাচাই করে নিন। কাজের সময় ফোন রিসিভ করাও অনেকে ক্ষতিকর মনে করেন। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র ইমেইল যোগাযোগ ঠিক রেখে বাকিগুলি বন্ধ করে দিন। এ কাজ শেষ হলে অন্য কাজগুলি করুন।
সহজ একটি উদাহরন দেখা যাক, দুঘন্টা মনোযোগ দিয়ে যে কাজ শেষ করা যায় সেই কাজ মাল্টিটাস্কিং এ ৮ ঘন্টা লাগতে পারে। কোনটি লাভজনক হিসেব করে নিন।
. কম ঘুম
ফ্রিল্যান্সারকে অনেক সময়ই অনিয়মিত কাজ করতে হয়। ফলে রাতের ঘুম নিয়ে সমস্যায় পরতে হয়। এর প্রভাব পড়ে মনোযোগের ওপর।
এবিষয়ে পরামর্শ একেবারে নির্দিষ্ট। ঘুমের সমস্যা করে কাজ করবেন না। রাতের ঘুম ঠিক রেখে প্রয়োজনে সকালে উঠে করার চেষ্টা করুন।
. ক্লায়েন্টের সমালোচনার ভয়
সম্ভবত প্রতিটি ফ্রিল্যান্সারকেই এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ক্লায়েন্ট যখন সমালোচনা করছেন তখন আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। সবসময়ই মনে হচ্ছে এভাবে করলে তিনি পছন্দ নাও করতে পারেন।
বিষয়টিকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। তিনি যদি সমালোচনা করেনই তাহলে সবচেয়ে বেশি যা হতে পারে, সেকাজটি হাতছাড়া হতে পারে। নিজেকে বিশ্বাস করার আপনি সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন, প্রয়োজনে আরো করবেন। হয়থ তিনি যেকথা বলেছেন সেটাই ঠিক। আপনার কাজ যথেষ্ট ভাল হয়নি।
সমালোচনাকে কখনো ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। বিশ্বের প্রতিটি মানুষই ভুল করেন, এমন কিছু করেন যা আসলেই সমালোচনাযোগ্য।
. আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকা
এই সমস্যার সমাধান ইচ্ছে করলেই করা যায় না। যদি নিজের খরচ চালানোর মত আয় না হয় এবং অন্য কোন আয়ের উতস না থাকে, সহায়তা করার মত কেউ না থাকে তাহলে এর প্রভাব কাজে পরতে বাধ্য।
এই সমস্যা সমাধানে সার্বজনিন নিয়ম মেনে চলতে চেষ্টা করুন। যে কাজে সম্ভাবনা বেশি, অর্থ বেশি সেদিকে বেশি মনোযোগ দিন। পরিমানে কম, অর্থে বেশি এমন কাজের চেষ্টা করুন। কিছু সঞ্চয় করুন।
. সময়মত কাজ শেষ করার চাপ
কাজের পরিমানের তুলনায় যদি হাতে সময় কম থাকে তাহলে এর প্রভাব কাজে পরতে বাধ্যভ প্রচলিত প্রবাদ, তাড়াহুড়ার কাজ ভাল হয় না। অথচ আপনার সাফল্য নির্ভর করছে ভাল কাজের ওপর।
কাজের জন্য পর্যাপ্ত সময় নিয়ে কাজে হাত দিন। যে কাজে ৪ দিন সময় লাগার কথা সেকাজের জন্য আগেই ৬ দিন সময় নিন। কাজ ঠিক ঠিকবে, ক্লায়েন্ট খুশি থাকবেন।
বিষয়গুলি একসাথে করলে যা পাওয়া যায় তা হচ্ছে, ক্রিয়েটিভিটির নিজস্ব গতি রয়েছে। আপনি ইচ্ছে করলেই তাকে বাড়িয়ে নিতে পারেন না। বরং সেটা ঠিক রাখার জন্য অনিয়মগুলি ত্যাগ করাই যথেষ্ট।
Posted by Mofijul Molla
Change of Your Modern Life
-
-
Building Web Applications with HTML5, CSS3, and Javascript: An Introduction to HTML5 Jason Clark Head of Digital Access & Web Services M...
|